৩২ হাজার চাকরি বাতিল মামলার একটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ খবর সামনে এসেছে! ৩২ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি বাতিলের নির্দেশের ওপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশের মেয়াদ বাড়াল হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে স্থগিতাদেশের মেয়াদ বৃদ্ধি করলো ডিভিশন বেঞ্চ! সঙ্গে নতুন (32000 primary teacher) একগুচ্ছ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে! ৩২০০০ শিক্ষকের চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়, গত ১২ই মে।
সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে গিয়েছিলেন চাকরিচ্যুতদের একাংশ এবং পর্ষদ। সেই চাকরি বাতিলের নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশের মেয়াদ বৃদ্ধি করল কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সৌমেন সেন এবং বিচারপতি উদয় কুমারের ডিভিশন বেঞ্চ। আগামী ৩ অক্টোবর এই মামলার পরবর্তী শুনানি। ফলে এখনই ইন্টারভিউ দিতে হবে না ঐ ৩২০০০ কর্মরত প্রাথমিক শিক্ষকদের! তাঁদের চাকরিও বাতিল হচ্ছে না! এই মামলার অগ্রগতির উপর তাঁদের চাকরির ভবিষ্যৎ টিকে থাকবে!
৩২ হাজার শিক্ষকের (32000 primary teacher) চাকরি আপাতত বহাল রাখল ডিভিশন বেঞ্চ! প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে অনিয়মের জেরে কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চ বাতিল ঘোষণা করে ৩২ হাজার চাকরিরত শিক্ষকের চাকরি! তাঁদের ইন্টারভিউ দিয়ে পুনরায় নিজেদের চাকরি ফিরে পেতে হবে বলে তখন নির্দেশ দিয়েহিল সিঙ্গেল বেঞ্চ!
এখানে ক্লিক করুন প্রাথমিক পর্ষদের নতুন ওয়েবসাইট ভিজিট করতে!
গতকালকের কলকাতা হাইকোর্টে রায়ের পরে ঐ ৩২০০০ (32000 primary teacher) কর্মরত শিক্ষক সস্থি পেল!সিঙ্গল বেঞ্চের ঐ নির্দেশের ওপর ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিয়েছিল হাইকোর্টের বিচারপতি সুব্রত তালুকদার ও বিচারপতি সুপ্রতিম ভট্টাচার্যর ডিভিশন বেঞ্চ। সম্প্রতি বিচারপতি তালুকদার অবসর নেওয়ায় সোমবার এই মামলা বিচারপতি সৌমেন সেন ও বিচারপতি উদয় কুমারের ডিভিশন বেঞ্চে শুনানির জন্য ওঠে। সিঙ্গল বেঞ্চের রায়কে আগেই স্থগিতাদেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। সেই স্থগিতাদেশ সোমবার বহাল রাখালো কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সৌমেন সেন ও বিচারপতি উদয় কুমারের ডিভিশন বেঞ্চ! সঙ্গে এই মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া অব্দি তাঁরা পূর্ণ বেতন পাবেন, যেমন ভাবে তাঁরা বর্তমানে বেতন পেয়ে আসছেন!
আগামী ৩ অক্টোবর পর্যন্ত স্থগিতাদেশের মেয়াদ বাড়ায় আদালত। ৩ অক্টোবর এই মামলার পরবর্তী শুনানি দিন ধার্য হয়েছে । ২০১৪ সালে টেট উত্তীর্ণ প্রায় ১ লক্ষ ২৫ হাজারের নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল ২০১৬ সালে। টেট উত্তীর্ণদের মধ্যে থেকে চাকরি দেওয়া হয় প্রায় ৪২,৯৪৯ জনকে। ওই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় একাধিক ‘ত্রুটি’ রয়েছে বলে অভিযোগ তুলে গত বছর কলাকাত হাইকোর্টে মামলা করেন প্রিয়ঙ্কা নস্কর সহ প্রায় ১৪০ জন চাকরিপ্রার্থী।
অভিযোগ ওঠে, ওই ৪২,৯৪৯-এর মধ্যে ৩২,০০০ (32000 primary teacher) প্রার্থী ‘অপ্রশিক্ষিত’। এ ছাড়াও তাঁদের নিয়োগের ক্ষেত্রে সঠিক পদ্ধতিতে ইন্টারভিউ এবং ‘অ্যাপ্টিটিউড টেস্ট’ না নিয়েই চাকরি দেওয়া হয়েছে ! ওই মামলায় বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় কয়েক জন পরীক্ষার্থী এবং ইন্টারভিউয়ার (প্রায় ৩২ জন)-এর বয়ান রেকর্ড করেন। তার পরেই মামলাকারীদের অভিযোগের সত্যতা রয়েছে বলে তিনি মনে করেন। তাঁর মন্তব্য ছিল, “এই নিয়োগে ব্যাপক দুর্নীতি করা হয়েছে। ঢাকি-সমেত বিসর্জন দিয়ে দেব।”
গত ১২ই মে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় ৩২,০০০ শিক্ষকের চাকরি বাতিল ঘোষণা করেন। সঙ্গে এও জানানো হয় যে পরের চার মাস ওই ৩২,০০০ (32000 primary teacher) শিক্ষকরা পার্শ্বশিক্ষকের (প্যারাটিচার) মতো বেতন পাবেন। তিন মাসের মধ্যে পর্ষদকে নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। তাতে অংশ নিতে পারবেন ওই ৩২,০০০ চাকরিচ্যুতরা। নতুন করে চাকরি দিতে হবে যোগ্যতার ভিত্তিতে। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের একক বেঞ্চের ওই রায়ের ফলে ৩২,০০০ চাকরিচ্যুত শিক্ষক শুধু নন, ২০১৪ সালের টেট উত্তীর্ণদের জন্যও নিয়োগে অংশ নেওয়ার দরজা খুলে যায়। এই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে প্রথমে কলকাতা হাইকোর্টে ডিভিশন বেঞ্চে এবং পরে সুপ্রিম কোর্টে যায় প্রাথমিক পর্ষদ ও চাকরিচ্যুত শিক্ষকরা!
গত ১৯ মে বিচারপতি সুব্রত তালুকদার এবং বিচারপতি সুপ্রতিম ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ একক বেঞ্চের চাকরি বাতিলের নির্দেশের উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দেয়। ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, আপাতত ওই ৩২,০০০ (32000 primary teacher) শিক্ষকের চাকরি বাতিল হচ্ছে না। তবে নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় তাঁদের অংশ নিতে হবে। সেখানে সফল হলেই চাকরি থাকবে, নইলে নয়। অর্থাৎ, ডিভিশন বেঞ্চের রায়ের ফলে চাকরি বহাল থাকে ৩২,০০০ জনের।
ডিভিশন বেঞ্চের এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করা হয় সুপ্রিম কোর্টে! গত ৭ জুলাই দীর্ঘ শুনানির পরে সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট ভাষায় জানায়, চাকরি বাতিল নিয়ে মামলার যৌক্তিকতা (মেরিট) বা বাদী-বিবাদী পক্ষের কোনও যুক্তির উপর আদালত মতামত দেবে না। শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ, পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে ওই ৩২,০০০ শিক্ষক চাকরি করেছেন। তাই চাকরি বাতিলের জন্য তাঁদের কিছু অংশকে মামলায় যুক্ত করে বক্তব্য শোনা উচিত ছিল। যা হাই কোর্টের একক এবং ডিভিশন বেঞ্চ করেনি।
তাই ক্ষতিগ্রস্তদের মামলায় সুযোগ করে দিতে এবং তাঁদের বক্তব্য শুনতে ফের হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলা ফেরত পাঠায় সুপ্রিম কোর্ট!
সুপ্রিম কোর্ট কোনও নির্দেশ দিয়ে জানিয়ে দেয়,যতটা দ্রুত সম্ভব এই মামলা নিষ্পত্তি করতে হবে এবং সিঙ্গল বেঞ্চের রায়ে যাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত, তাঁদের বক্তব্য যতটা দ্রুত সম্ভব শুনতে হবে! তাই এই মামলা এখন ফ্রেস ভাবে বিচারপতি সৌমেন সেন এবং বিচারপতি উদয় কুমারের ডিভিশন বেঞ্চে শুনানি হচ্ছে। এখানে সব পক্ষের বক্তব্য ফ্রেশ ভাবে শোনা হবে, বিশেষ করে ঐ ৩২ হাজার শিক্ষকদের! এবং এই ডিভিশন বেঞ্চের রায়ের উপর ঐ ৩২,০০০ কর্মরত শিক্ষকদের ভাগ্য টিকে থাকবে!
তাহলে ঘুষ দিয়ে চাকরি কেনা এবং বেঁচা দুইই আইনসিদ্ধ হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গে। ধন্য কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ, ধন্য দুর্নীতিগ্রস্ত সরকারি শিক্ষাদপ্তর। এ কোন বেজন্মা-বিচারব্যবস্থার অধীনে বাস করছি আমরা যেখানে ঘুষ দেওয়া ও নেওয়া দুইই বৈধ বলে স্বীকৃতি দিতে চলেছে রাজ্যের হাইকোর্ট। এই কোর্টের কি কোন দরকার আছে??? এখন আদালত তাহলে অবৈধ ক্রিয়াকলাপকে বৈধ করার জন্য মাথা উটু করে দাঁড়িয়ে আছে।