আগেই ২০১৪-র টেট নিয়ে বড় নির্দেশ (MAT 1594) দিয়েছিল হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে,গত ১৩ই এপ্রিল ! কিন্তু এত মাস পার হয়ে গেলেও ঐ লক্ষ লক্ষ চাকরি প্রার্থীদের কবে নম্বর দেওয়া হবে অর্থাৎ নতুন করে ৬ নম্বর দেওয়ার পর তাঁদের রেজাল্ট কবে নতুন করে প্রকাশ করা হবে? সেই উত্তর কারোর কাছে ছিল না!
এই নিয়ে নতুন করে বার বার বিভিন্ন মামলার পরিপ্রেক্ষিতে ভর্ৎসনা মুখে পড়তে হচ্ছে প্রাথমিক পর্ষদকে! আগেই সিঙ্গেল বেঞ্চ কিছু চাকরি প্রার্থীর এবং পরে ডিভিশন বেঞ্চ সকল ২০১৪ টেট চাকরি প্রার্থীরদের ঐ ৬ নম্বর দিয়ে তাঁদের রেজাল্ট ফের প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাই কোর্ট ! টেট পরীক্ষায় ৬টি ভুল প্রশ্নের নম্বর দিতে হবে সবাইকে বলে ডিভিশন বেঞ্চের বিচারপতি সুব্রত তালুকদার (MAT 1594/2018) নির্দেশ দিয়েছিলেন! কিন্তু সেই নির্দেশ এখনও কার্যকারী হয় নি! এবার সেই রেজাল্ট প্রকাশ নিয়ে একটি খুবই ভালো খবর পাওয়া গেছে!
পর্ষদের মাননীয় আইনজীবী সিঙ্গেল বেঞ্চে একটি মামলার পরিপ্রেক্ষিতে কোর্ট কে জানায়- যেহেতু উল্লিখিত ছয় নম্বর দেওয়ার জন্য উক্ত ডিভিশন বেঞ্চ দ্বারা কোন সময়সীমা দেওয়া হয়নি। তাই তাঁরা এই বিষয়ে এখনই কোনও সিধান্ত নেয় নি! কিন্তু এর জবাবে কোর্ট মনে করে যে, ডিভিশন বেঞ্চ সময়সীমা না দেওয়ায় বিষয়টি অযৌক্তিক সময়ের জন্য বিচারাধীন রাখা যাবে না। অর্থাৎ এই ৬ নম্বর দেওয়া বিষয়টি এমনি এমনি ফেলে রাখা যাবে না! কিন্তু অবশেষে আজকে জানা গেছে যে, প্রাথমিক পর্ষদ আগামী ২১শে নভেম্বরের মধ্যে MAT 1594 কেসের ভিত্তিতে টেট ২০১৪ এর রেজাল্ট প্রকাশ করবে! অর্থাৎ ফের নতুন করে লক্ষ লক্ষ চাকরি প্রার্থীর ভাগ্য খুলতে চলেছে!
২০১৮ সালে ৩রা অক্টোবর ভুল প্রশ্ন মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছিল, শুধুমাত্র মামলাকারীরাই ৬ ভুল প্রশ্নে সম্পূর্ণ নম্বর পাবেন। কিন্তু এদিন ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশে এই প্রশ্নগুলির উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করা সমস্ত টেট পরীক্ষার্থীই সম্পূর্ম উত্তর পাবেন, যদি না আগে তাঁরা এই নম্বর পেয়ে থাকেন! জানা গেছে প্রায় ১২ লক্ষ চাকরি প্রার্থীর খাতা ফের মূল্যায়ন করে এই নম্বর দেওয়ার কাজ শুরু করতে হবে পর্ষদকে! যেটা একটা বিরাট চ্যালেঞ্জ তাঁদের কাছে!
২০১৪ সালের টেটে পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে এই মামলাটি দায়ের করা হয় ২০১৮ সালে! সেখানে ৬টি প্রশ্ন ভুল রয়েছে এই অভিযোগ তুলে মামলা দায়ের হয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টের,তৎকালীন বিচারপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায়ের বেঞ্চে! এর পর মাননীয়া বিচারপতি একটি কমিটি গঠন করেন বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞদের নিয়ে। কমিটি জানায়, ৬টি প্রশ্ন ভুল রয়েছে। এর পরে বিচারপতি চট্টোপাধ্যায় শুধুমাত্র মামলকারীদের নম্বর দেওয়ার নির্দেশ দেন গত ৩রা অক্টোবর ২০১৮ সালে।
সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হন অন্য চাকরিপ্রার্থীদের কয়েক জন। তাঁদের বক্তব্য, শুধু মামলকারীরা কেন ভুল প্রশ্নের জন্য নম্বর পাবেন ? বাড়তি নম্বর সকলকে দেওয়া উচিত। কিন্তু বিচারপতি হরিশ টন্ডনের ডিভিশন বেঞ্চে পরাজিত হন মামলাকারীরা। এর পর মামলা গড়ায় সুপ্রিম কোর্টে। ২০১৯ সালের ১ এপ্রিল মামলা কলকাতা হাই কোর্টেই ফেরত পাঠায় সুপ্রিম কোর্ট। সেই মামলা এত দিন বিচারাধীন ছিল বিচারপতি সুব্রত তালুকদারের ডিভিশন বেঞ্চে। বৃহস্পতিবার তার (MAT 1594/2018) রায় ঘোষণা হল। এর জেরে টেট ২০১৪ রেজাল্ট আমূল বদলে যাওয়ার সম্ভাবনা। প্রাথমিক শিক্ষা (wbbpe)পর্ষদ সচিবকে আদালতের নির্দেশ, সকল পরীক্ষার্থীকে ৬ প্রশ্ন ভুলে সম্পূর্ণ নম্বর দিয়ে পদক্ষেপ করতে।
প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের টেট পরীক্ষা ২০১৫ সালে হয়। পরীক্ষার জন্য আবেদন করেন ২২ লক্ষ। পরীক্ষায় বসেন ১২ লক্ষ। টেট উত্তীর্ণ হন ১.২৫ লক্ষ। এবার ঐ ১২ লক্ষ চাকরি প্রার্থীরদের খাতা পুনঃ মূল্যায়ন করতে হবে! তবে যারা আগে ঐ ৬ টি প্রশ্নের নম্বর পেয়ে গেছে তাঁরা নতুন করে আর নম্বর পাবে না! সমস্ত ক্যান্ডিডেট(প্রায় ১২ লক্ষ),যারা আগে ঐ সমস্ত প্রশ্নের উপর নম্বর পাইনি কেবল তাঁদেরকেই ঐ নম্বর দিতে হবে!