প্রাথমিকে ৩২ হাজার সহকারী শিক্ষকের চাকরি বাতিল সংক্রান্ত মামলা যত দ্রুত সম্ভব হাইকোর্টকে নিষ্পত্তির নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট।- গতকালকে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি জে কে মাহেশ্বরী ও বিচারপতি কে ভি বিশ্বনাথনের বেঞ্চ ফের কলকাতা হাইকোর্টকে ৩২ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি নিয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে বলেছে। মে মাসে কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় ৩২ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের নিয়োগ বাতিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন। পরে সুপ্রিম কোর্ট ওই ৩২ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি আপাতত বহাল রাখার নির্দেশ দেয়। সেই সময়ই সুপ্রিম কোর্ট,হাইকোর্টকে এ নিয়ে বিবাদের দ্রুত নিষ্পত্তি করার নির্দেশ দিয়েছিল।
সোমবার শীর্ষ আদালতের বেঞ্চ জানিয়ে দিয়েছে, এর আগে হাইকোর্টের নির্দেশে চাকরিহারাদের একাংশ সুপ্রিম কোর্টে এসেছিলেন। এখন সেটিই আবার পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ নিয়ে এসেছে। তাই নির্দেশের কোনও পরিবর্তন হচ্ছে না। এর আগে গত ৭ জুলাই যা নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, এদিনও তাই দেওয়া হচ্ছে। অর্থাৎ হাইকোর্টকে যত দ্রুত সম্ভব এই মামলার নিষ্পত্তি করতে হবে। আরও একবার কলকাতা হাইকোর্টকে ৩২ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি নিয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে বলেছে। মে মাসে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় ৩২ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের নিয়োগ বাতিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন। ৭ জুলাই সুপ্রিম কোর্ট ওই তাঁদের চাকরি আপাতত বহাল রাখার নির্দেশ দেয়। সেদিনই শীর্ষ আদালত হাইকোর্টকে এ নিয়ে বিবাদের দ্রুত নিষ্পত্তি করার নির্দেশ দিয়েছিল।
সুপ্রিম কোর্টের এদিনের এই নির্দেশের ফলে ২০১৭ সালে চাকরি পাওয়া ৩২ হাজার সহকারী-শিক্ষকের আপাতত চাকরি যাচ্ছে না। এরপর হাইকোর্টের শুনানিতে যা হবে তা প্রাথমিকভাবে মেনে নিতে হবে। যদি কলকাতা হাইকোর্টের রায় নিয়ে খুশি না হয় চাকরি প্রার্থীরা তাহলে তাঁরা ফের সুপ্রিম কোর্টে আসতে পারবে! সেই সুযোগ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট!
৩২৩৯ মামলার আপডেট- ২০২০ সালে প্রাথমিক শিক্ষকের নিয়োগের সময় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়ায় ৩ হাজার ৯২৯টি পদ খালি পড়ে ছিল। আজ সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি অনিরুদ্ধ বসু ও বিচারপতি বেলা ত্রিবেদীর বেঞ্চে প্রাথমিক শিক্ষকের ৩৯২৯টি শূন্যপদে নিয়োগ নিয়ে মামলা ওঠে।
২০২২ সালে নিয়োগের সময় প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ পুরনো ৩৯২৯টি শূন্যপদ মোট খালি পদের সঙ্গে যুক্ত করে দেয়। তা নিয়ে মামলা হয়। যাঁরা ২০১৪-য় টেট পাশ করেছিলেন, তাঁদের নিযুক্ত করার দাবি ওঠে। কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের মাননীয় বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়,গত 26th September, 2022,তারিখে নির্দেশ দেন, পর্ষদকে ৩৯২৯টি শূন্যপদে নিয়োগ করতে হবে। তাঁর পর্যবেক্ষণ ছিল, এই শূন্যপদের অধিকার ২০১৪ সালের টেট উত্তীর্ণদের। তাই এই কেসের মামলাকারীদেরকে নিয়োগ করতে হবে। পর্ষদ এবং ২০১৭ সালের টেট উর্ত্তীর্ণদের একাংশ এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে যায়। মাননীয় বিচারপতি সুব্রত তালুকদার এবং সুপ্রতিম ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ গত 11.11.2022 তারিখে মাননীয় বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রায় সম্পূর্ণ রায়কেই বহাল রাখেন, কিন্তু এর সঙ্গে ডিভিশন বেঞ্চ জানায় শুধুমাত্র মামলাকারীদের নয় , সমস্ত ২০১৪ টেট পাসদের থেকে নিয়োগ করতে হবে।
এই মামলার শুনানির সময়ই বিচারপতি বসু বলেন, “আমরা তো বিভ্রান্ত হয়ে পড়ছি। ২০১৪, ২০১৫, ২০১৬, ২০২০, প্রাথমিক, একাদশ-দ্বাদশ, এত রকম মামলা।” সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি অনিরুদ্ধ বসু আজ স্বীকার করে নিয়েছেন, তাঁরা এত মামলা নিয়ে ‘কনফিউজড’। তাঁদেরই সব গুলিয়ে যাচ্ছে। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতির মুখে এই মন্তব্য শুনে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের আইনজীবী জয়দীপ গুপ্ত বলেছেন, “এমন কেউ নেই যিনি ধন্দে পড়ে যাচ্ছেন না। সকলেই বিভ্রান্ত হয়ে পড়ছেন।”