WB 4 Years Integrated Course- জাতীয় শিক্ষানীতি (NEP 2020) মেনে রাজ্যে চালু হচ্ছে চার বছরের অনার্স ডিগ্রি কোর্স। আগামী শিক্ষাবর্ষ অর্থাৎ জুলাই থেকে নয়া নিয়ম কার্যকর হবে। স্নাতক পাঠ্যক্রম নিয়ে ইউজিসির সংশ্লিষ্ট নির্দেশিকা উল্লেখ করে রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দপ্তরের তরফে শুক্রবার চিঠি পাঠানো হয়েছে সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়কে। রেজিস্ট্রারদের সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় এবং আওতাধীন কলেজগুলিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলে দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে অবশ্য কয়েক বছর আগে থেকেই এই ব্যবস্থা চালু রয়েছে। এর পাশাপাশি, স্নাতকোত্তর পাঠ্যক্রমের সময়সীমা দু’বছর থেকে কমিয়ে এক বছর করা হবে। যদিও এদিন রাজ্য সরকার সেই বিষয়ে কোনও নির্দেশিকা পাঠায়নি।
এখন উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা (WB 4 Years Integrated Course )চলছে। উত্তীর্ণ ছাত্রছাত্রীদের চার বছরের অনার্স ডিগ্রি কোর্সেই ভর্তি হতে হবে। এতদিন যা ছিল তিন বছরের। তবে তিন বছরের ডিগ্রি কোর্সও থাকছে। সেক্ষেত্রে স্নাতক ডিগ্রি মিললেও অনার্স মিলবে না। এবছর যারা উচ্চমাধ্যমিক দিচ্ছে, তারা এই নতুন নীতির মধ্যে আসবে। জাতীয় শিক্ষানীতি ২০২০ (NEP 2020) এর নিয়মকেই কার্যকরী করা হচ্ছে। এছাড়াও এবছর থেকে রাজ্যের একটি কেন্দ্রীয় পোর্টালের মাধ্যমেই চলবে কলেজে ভর্তির প্রক্রিয়া।
WB 4 Years Integrated Course(নতুন পদ্ধতিতে কী কী বলা আছে?)
- এখন থেকে যেকোন সময়, যতবার খুশি স্নাতক স্তরে পড়াশোনা করা থেকে বিরত থাকা বা ভর্তি হওয়া যাবে।
- স্নাতকের দু’টি সেমেস্টার (প্রথম বর্ষ) উত্তীর্ণ হলে সার্টিফিকেট কোর্স,১ বছর পর পড়া ছেড়ে দিলে দেওয়া হবে (UG Certificate).
- চারটি সেমেস্টার (দ্বিতীয় বর্ষ) উত্তীর্ণ হলে ডিপ্লোমা বলে গ্রাহ্য হবে,২ বছর পর পড়া ছেড়ে দিলে দেওয়া হবে (UG Diploma).
- ৩ বছর পর পড়া ছেড়ে দিলে দেওয়া হবে Bachelor Degree
- ৪ বছর পড়াশোনা (WB 4 Years Integrated Course) করলে, তবেই মিলবে Honours Bachelor Degree.
- এছাড়াও স্নাতক স্তরে পড়াশোনার সাথে মিলবে Internship এর সুযোগ।
- ব্যবসা, শিল্প, কলা, বিজ্ঞান ইত্যাদি সব বিষয়েই মিলবে এই সুযোগ।
- যেকোন সময় বিষয় পরিবর্তন করারও সুযোগ দেওয়া হবে।
চার বছরের কোর্সটি (WB 4 Years Integrated Course) গবেষণাভিত্তিকও হতে পারে। সেক্ষেত্রে বাড়তি সুবিধা পাবেন ছাত্রছাত্রীরা। ৭৫ শতাংশ বা তার বেশি নম্বর থাকলে সরাসরি পিএইচডির ‘কোর্সওয়ার্ক’ শুরু করা যাবে। সেক্ষেত্রে মাস্টার ডিগ্রির নির্ধারিত এক বছরের কোর্সটি শেষ করতে হবে।
এই ৪ বছরের ইন্টিগ্রেটেড কোর্স নিয়ে অভিজ্ঞ মহলে বক্তব্য!
১) নয়া ২০২০ জাতীয় শিক্ষানীতিতে মাধ্যমিক ‘গুরুত্বহীন’ হয়ে পড়বে! অন্যদিকে গুরুত্ব বাড়বে উচ্চ-মাধ্যমিকের। উচ্চমাধ্যমিকে কলা ও বিজ্ঞান তফাৎ থাকছে না৷ বিষয় বাছাইয়ে বাধ্যবাধকতাও থাকছে না৷ অর্থাৎ কেউ পদার্থবিদ্যার সঙ্গে চাইলে সঙ্গীত নিয়েও পড়তে পারেন। আবার রসায়ন আর ইতিহাসও একসঙ্গে পড়া যাবে। |
২) ১৫ বছরের স্কুলশিক্ষাকে ভাগ করা হয়েছে ৫+৩+৩+৪ ভাগে ৷ ৩ বছরের প্রাইমারি-অঙ্গনওয়াড়ি শিক্ষা ৷ ক্লাস ১ ও ক্লাস ২ কে রাখা হচ্ছে প্রি-প্রাইমারির মধ্যে। ক্লাস নাইন থেকে টুয়েলভ – আটটি সেমেস্টারে পড়াশোনা চলবে। ৪ বছরের মধ্যে ৪০টি বিষয়ে পরীক্ষা দিতে হবে। |
৩) নয়া নীতিতে বিশেষ ভাবে জোর দেওয়া হয়েছে স্কুলেই ভোকেশনাল শিক্ষায়৷ এই নয়া শিক্ষানীতিতে বলা হয়েছে, ছাত্রদের মধ্যে স্কুল জীবন থেকেই অঙ্ক ও বিজ্ঞান ভাবনা বাড়াতে ভোকেশনাল শিক্ষার উপর জোর দেওয়া হয়েছে৷ |
8) নয়া শিক্ষানীতির অন্যতম পরিবর্তন হল আঞ্চলিক মাতৃভাষাকে গুরুত্ব দেওয়া এবং শিক্ষার মাধ্যম হিসাবে আঞ্চলিক মাতৃভাষাকেই সামনের সারিতে রাখা। |
৫) নয়া শিক্ষা নীতিতে স্কুল শিক্ষার সঙ্গে সঙ্গে উচ্চশিক্ষাতেও বড়সড় পরিবর্তন আসতে চলেছে ৷ এবার থেকে স্নাতক অনার্স কোর্স তিন বছরের নয়, চার বছরের৷ স্নাতকোত্তরে ১ বা দুবছরের কোর্স পড়ানো হবে ৷ এছাড়া স্নাতক ও স্নাতকোত্তর একসঙ্গে পড়ার জন্য ৫ বছরের একটি ইন্টিগ্রেটেড কোর্সেরও ব্যবস্থা রয়েছে নয়া জাতীয় শিক্ষানীতিতে৷ |
৬) উচ্চশিক্ষায় একটিই নিয়ামক সংস্থা ৷ কলেজে একাধিক এন্ট্রি-এগজিট ব্যবস্থা ! পুরো কোর্স শেষ না হলেও মিলবে স্বীকৃতি! প্রথম বছর শেষ করলে সার্টিফিকেট ৷ দ্বিতীয় বছর শেষ করতে পারলে ডিপ্লোমা ৷ পুরো কোর্স শেষ করলে ডিগ্রি৷ |
৭) পছন্দমতো বিষয় বেছে নিতে পারবেন পড়ুয়ারা ৷ কলেজে বিষয়ের ওপর গবেষণার সুযোগ৷ গবেষণাপত্র গৃহীত হলে আলাদা সার্টিফিকেট৷ |
৮) তৈরি হবে ন্যাশনাল টেস্ট এজেন্সি ৷ এমফিল উঠে যাচ্ছে, থাকছে শুধু পিএইচডি৷ |
৯) আইআইটির প্রতিষ্ঠানকে আরও কয়েকটি ক্ষেত্রে স্বনির্ভর হতে জোর৷ |
১০) গোটা দেশে যে ৪৫ হাজার কলেজ রয়েছে তাতে ২০৩৫ সালের মধ্যে ৫০ শতাংশ এনরোলমেন্টের লক্ষ্যমাত্রা রেখেছে কেন্দ্র৷ |