উপকৃত হবে রাজ্যের বহু প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক স্কুল ! স্কুলে-স্কুলে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন (WB Special educator recruitment 2023) শিশুদের (চিলড্রেন উইথ স্পেশাল নিডস-CWSN) পড়ানো ও প্রশিক্ষণের জন্য বিশেষজ্ঞ শিক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্কুল শিক্ষা দপ্তরের! বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের জন্য প্রতিটি স্কুলে অন্তত একজন শিক্ষক নিয়োগের পরিকল্পনা করেছে রাজ্য সরকার। আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে তা বাস্তবায়নের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। শনিবার প্রকাশিত রাজ্যের শিক্ষানীতিতে প্রতি স্কুলে স্পেশাল এডুকেটর নিয়োগের কথা বলা হয়েছে। সম্প্রতি স্পেশাল এডুকেটরদের তরফে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছিল শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে। সেখানেও তিনি এই শিক্ষকদের আশ্বাস দিয়েছিলেন।
এর আগে এই স্পেশাল এডুকেটর নিয়োগ নিয়ে মামলাও দায়ের হয়েছিল কোলকাতা হাইকোর্টে! রাজ্যের স্কুলগুলিতে নিয়োগের অধিকার নিয়ে একটি মামলা করেছিলেন স্পেশাল এডুকেশনে ডিগ্রিধারী চাকরিপ্রার্থীরা। তাঁদের আইনজীবী এক্রামুল বারি জানিয়েছেন, নির্দিষ্ট যোগ্যতা থাকায় মামলাকারীরা রাজ্যের স্কুলে নিয়ম মোতাবেক নিয়োগের দাবি জানিয়েছিলেন। কিন্তু সরকার কর্ণপাত করেনি। তাই তাঁরা আদালতের দ্বারস্থ হন। সেই মামলায় বিচারপতি রাজ্যের হলফনামা তলব করেন। সেই হলফনামাতেই এ কথা উঠে এসেছে।
বিভিন্ন স্তরে শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে রাজ্যে মামলা, পাল্টা মামলা চলছে। স্রেফ মামলার জেরেই পিছিয়ে যাচ্ছে বেশকিছু স্তরে শিক্ষক নিয়োগ। সুপ্রিম কোর্টের একটি নির্দেশে, বিশেষ শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে এবার রাজ্য আরও চাপে পড়ল। এমাসের মধ্যেই রাজ্য সরকারকে জানাতে হবে, বিশেষ শিক্ষক (WB Special educator recruitment 2023) নিয়োগে কী কী পদক্ষেপ করেছে তারা। এ প্রসঙ্গে বিকাশ ভবনের এক আধিকারিক বলেন, তথ্য সংগ্রহ করে রিপোর্ট তৈরির কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে।
বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের জন্য বিশেষ শিক্ষক প্রয়োজন। এই শিক্ষকদের থাকতে হবে রিহ্যাবিলিটেশন কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া (RCI) দ্বারা অনুমোদিত বিশেষ B.Ed বা বিশেষ D.Ed ডিগ্রি। এখন আইন অনুযায়ী, সাধারণ স্কুলে এই বিশেষ শিশুদের ভর্তি নিতে হবে। তাদের জন্য রাখতে হবে একজন করে বিশেষ শিক্ষক। তবে এরাজ্যে আইনটি পুরোপুরি বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি। তাই সুপ্রিম কোর্ট এই নির্দেশ দিয়েছে। রাজ্যে এই মুহূর্তে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন কত শিশু রয়েছে, কতজন শিক্ষক কর্মপ্রার্থী রয়েছেন, ভারত সরকারের গেজেট অনুযায়ী প্রতি স্কুলে একজন করে বিশেষ শিক্ষক নিয়োগ করলে বর্তমানে রাজ্যে শূন্যপদের সংখ্যা কত প্রভৃতি সুপ্রিম কোর্টকে জানানোর নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি রজনীশ পান্ডে।
সূত্রের খবর, কমিশন খুব তাড়াতাড়ি যে কোনও দিন এই (WB Special educator recruitment 2023) নিয়োগ বিধি শিক্ষা দপ্তরকে পেশ করবে। শিক্ষার অধিকার আইন ২০০৯ অনুযায়ী, ৬-১৪ বছরের সমস্ত শিশুদের পাশাপাশি বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন পড়ুয়াদের জন্যও সাধারণ স্কুলে স্পেশাল এডুকেশন শিক্ষক নিয়োগ করতে বলা হয়েছিল। তারপরও দেশের সিংহভাগ রাজ্যই বিষয়টিতে সে রকম গুরুত্বই দেয়নি। শেষমেষ সুপ্রিম কোর্টকে হস্তক্ষেপ করতে হয়। দেশের সর্বোচ্চ আদালত ২০১৬ সালে এক রায়ে সে কথা মনে করিয়ে দেয়। যদিও তারপরও সাত বছর অতিক্রান্ত।
পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি রাজ্যে মোট স্কুল প্রায় ৯৪,৭৪৪টি, সব মিলিয়ে রাজ্যে মোট পড়ুয়া প্রায় ১,৮৭,৩৩,৩৬৭ জন, তাঁদের মধ্যে প্রায় ১,৬০,৫৯৯ জন সিডব্লুএসএন (CWSN) পড়ুয়া! ■ মোট পড়ুয়ার এক শতাংশ বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ৭৩, ১৮৭টি স্কুলে র্যাম্প আছে ■ বালকদের ২৬, ৪৫১টি স্কুল ডিসএবেলড বান্ধব শৌচাগার ■ বালিকাদের ১৩০০৫টি স্কুলে ডিসএবেলড বান্ধব শৌচাগার! ■ ২০২২-২৩ সূত্রে প্রাপ্ত ইউডাইস রিপোর্ট!
এবার থেকে রাজ্যের মধ্যে থাকা সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত এবং সরকারি স্কুলগুলিতে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের জন্য প্রতিটি স্কুলে অন্তত ১জন করে শিক্ষক নিয়োগ করা হবে বলে জানা গেছে! তবে একসঙ্গে এই ৯০ হাজার শিক্ষক বা শিক্ষিকা নিয়োগ করা হবে না। আগামী ৫ বছর ধরে ধাপে ধাপে এই শিক্ষক-শিক্ষিকা নিয়োগ করা হবে। অর্থাৎ প্রতি বছরে প্রায় ১৬ হাজার করে শিক্ষক-শিক্ষিকা নিয়োগের পথে হাঁটাতে চলছে রাজ্য সরকার!