This Post Contents
WB State Education Policy 2023- গেজেট বিজ্ঞপ্তি আকারে রাজ্য নতুন শিক্ষানীতি প্রকাশিত হল গতকালকে। জারি হয়ে গেল রাজ্যের শিক্ষাব্যবস্থাকে ২০৩৫ সালের মধ্যে নতুন শিখরে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা স্থির করে রাজ্যের নতুন শিক্ষানীতি। যার ১৭৮টি (WB State Education Policy 2023) পৃষ্ঠাজুড়ে প্রাক-প্রাথমিক থেকে শুরু করে মুক্ত স্কুল, প্রাপ্তবয়স্কদের শিক্ষা, উচ্চশিক্ষা-সব স্তরেই সমানভাবে জোর দেওয়া হয়েছে। সকল পড়ুয়ার জন্য একটি ‘ইউনিক আইডেন্টেটি কার্ড’ তৈরি করা হবে। ওই কার্ডের সঙ্গে থাকবে মেমোরি চিপ। তাতে তৃতীয় শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পডুয়াদের পরীক্ষার ফলাফল নথিবদ্ধ করা থাকবে।
অর্থাৎ বর্তমানে স্কুল শিক্ষাকে ৫ (প্রাক-প্রাথমিক থেকে চতুর্থ শ্রেণি পাঁচ) বছর+৪ (পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি চার) বছর+২ (নবম- দশম) বছর+২ (একাদশ-দ্বাদশ) বছর , এ ভাবে ভাগ করা হয়েছে । প্রত্যেক পড়ুয়ার একটি ইউনিক আইডেন্টিটি কার্ডও থাকবে।
রাজ্যের শিক্ষা নীতিতে (WB State Education Policy 2023) বলা হয়েছে, প্রাক-প্রাথমিকের এক বছর প্রাথমিক স্কুলের সঙ্গে যোগ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে অঙ্গনওয়াড়ির দু’বছরকেও প্রাথমিক স্কুলে নিয়ে এসে মূল স্কুলের সঙ্গে যুক্ত করার কথা বলা হয়েছে। যদি মূল স্কুলের সঙ্গে অঙ্গনওয়াড়িকে যুক্ত করা না যায়, তা হলে একটি প্রাথমিক স্কুলকে আশপাশের কয়েকটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের উপরে নজরদারি করার কথা বলা হয়েছে।
রাজ্যের স্কুলশিক্ষায় সেমেস্টার পদ্ধতি চালু হতে চলেছে। অষ্টম শ্রেণি থেকে এই পদ্ধতিতে মূল্যায়ন চালু হবে ধাপে ধাপে। একাদশ-দ্বাদশ স্তরেই প্রথম চালু হবে সেমেস্টার। তবে মাধ্যমিক পরীক্ষা থাকছে। শনিবার প্রকাশিত হয়েছে রাজ্যের নয়া (WB State Education Policy 2023) শিক্ষানীতি। সেখানে বিষয়টি স্পষ্ট করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় শিক্ষানীতির অনুকরণে মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক স্তর জুড়ে চার বছর করায় মত নেই রাজ্যের।
রাজ্য শিক্ষা নীতি প্রস্তাব আকারে প্রকাশিত হয়েছিল আগেই। শনিবার সেই শিক্ষা নীতি সরকারি বিজ্ঞপ্তি (গেজেট) আকারে প্রকাশ করা হয়েছে। এই নীতির উপরে ভিত্তি করেই ২০৩৫ সালের মধ্যে শিক্ষার ‘শ্রেষ্ঠত্বের শিখরে পৌঁছনোর দাবি করেছে রাজ্য সরকার। মাধ্যমিক আপাতত অপরিবর্তিত থাকলেও উচ্চ মাধ্যমিক সেমেস্টার পদ্ধতিতে হতে চলেছে। প্রথম পরীক্ষা হবে এমসিকিউ পদ্ধতিতে। পরের পরীক্ষায় থাকবে বড় প্রশ্ন। দু’টি পরীক্ষার নম্বর নিয়ে চূড়ান্ত ফল নির্ধারিত হবে। এখনও পর্যন্ত যা খবর, ২০২৬ সালের আগে পর্যন্ত উচ্চ মাধ্যমিক অপরিবর্তিতই থাকবে। তারপর আসবে বদল।
■ প্রাক-প্রাথমিকের আগে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে দুই বছরের শিক্ষা।
রাজ্যের অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলি এবার থেকে প্রাথমিক স্কুলগুলির সঙ্গে যুক্ত হবে। তিন এবং চার বছর বয়সি শিশু যারা এতদিন অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলিতে আসত এবার তাদের প্রথাগত পঠনপাঠনের সঙ্গে যুক্ত করা হবে। এই বয়সি শিশুদের কী পড়ানো হবে তার বিশেষ পাঠ্যক্রম তৈরি করবে স্কুল শিক্ষা দপ্তর। রাজ্যের নিজস্ব শিক্ষানীতিতে এমনটাই বলা হয়েছে। এই শিশুরা পাঁচ বছরের হলেই প্রাক্-প্রাথমিক স্তরে যাবে এবং ৬ বছর বয়স হলে প্রথম শ্রেণিতে পড়বে।
■একাদশ-দ্বাদশে সেমিস্টার ব্যবস্থা।
দ্বাদশ শ্রেণির প্রথম সেমেস্টার, যা নভেম্বরে হবে, তাতে এমসিকিউয়ের মাধ্যমে মূল্যায়ন করার ভাবনা রয়েছে সংসদের। এর পাশাপাশি, একাদশ শ্রেণি এবং উচ্চ মধ্যমিক পরীক্ষা দু’টি সিমেস্টারে ভাগ করার কথা বলা হয়েছে। প্রথম সিমেস্টারে মাল্টিপল চয়েস কোয়েশ্চেন এবং দ্বিতীয় সিমেস্টারে মাঝারি ও বড় প্রশ্নের উপর পরীক্ষার কথা বলা হয়েছে। ২০২৬ সালে যারা উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দেবে, তাদের দু’টি সিমেস্টারে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে হবে।
■পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণির জন্য ত্রি-ভাষা ফর্মুলা।
WB State Education Policy 2023-অষ্টম শ্রেণি থেকে ধাপে ধাপে সিমেস্টার চালুর ভাবনাও প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
■ থাকছে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা।
জাতীয় শিক্ষা নীতিতে (WB State Education Policy 2023) দশম শ্রেণির পরীক্ষা তুলে দেওয়া হলেও রাজ্যের শিক্ষা নীতিতে মাধ্যমিক পরীক্ষা থাকছে। উচ্চ মাধ্যমিকে দু’টি পরীক্ষা দিতে হবে! একটি তার ফলে এ রাজ্যের স্কুলের পড়ুয়াদের একটি অতিরিক্ত পরীক্ষা দিতে হবে। একটি পরীক্ষা হবে এমসিকিউ পদ্ধতিতে এবং পরের পরীক্ষাটি হবে বড় প্রশ্নের!
কেন্দ্রীয় শিক্ষানীতির অনুকরণে মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক স্তর জুড়ে চার বছর করায় মত নেই রাজ্যের। এমনকী, উচ্চ প্রাথমিক স্তরেও কোনও পরিবর্তন হচ্ছে না। রাজ্যের ব্যাখ্যা, কোনও পরিবর্তন আনতে গেলে বিপুল ব্যয়ভার সামলানোর পাশাপাশি শিক্ষার মান ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়। মাধ্যমিক আপাতত অপরিবর্তিত থাকলেও উচ্চ মাধ্যমিক সেমেস্টার পদ্ধতিতে হতে চলেছে। প্রথম পরীক্ষা হবে এমসিকিউ পদ্ধতিতে।
■ শিক্ষকদের গ্রামের স্কুলে পাঁচ বছর বাধ্যতামূলক শিক্ষকতা।
চিকিৎসকদের ক্ষেত্রে যেমন গ্রামে গিয়ে চিকিৎসা করা বাধ্যতামূলক, ঠিক তেমনই গ্রামীণ এলাকায় শিক্ষকতা করতে হবে শিক্ষকদের। রাজ্য শিক্ষা (WB State Education Policy 2023) নীতিতে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল, এক জন শিক্ষককে কর্মজীবনে পাঁচ বছর গ্রামে শিক্ষকতা করতে হবে। সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে সেই প্রস্তাব মেনে নেওয়া হয়েছে। নতুন চাকরির বিজ্ঞপ্তিতেই তা উল্লেখ করে দেওয়া হবে। যদিও অভিজ্ঞ শিক্ষকদের মতে, এই নিয়ম অর্থহীন। তা ছাড়া, শিক্ষক বদলির বিষয়টি আপাতত সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন। এ সব না-করে গ্রামের স্কুলের পরিকাঠামো উন্নয়ন এবং পর্যাপ্ত শিক্ষক প্রয়োজন বলে তাঁরা জানিয়েছেন। স্কুলের ক্ষেত্রে নিজেদের নিয়ম করলেও উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে জাতীয় শিক্ষা নীতির চার বছরের স্নাতক কোর্স মেনে নিয়েছে রাজ্য।
■ শিক্ষকদের শিক্ষকদের প্রোমোশন নীতি।
শিক্ষক-শিক্ষিকাদের জন্য (WB State Education Policy 2023) প্রমোশনের ভাবনাও রয়েছে সরকারের। শিক্ষকদের বহুদিনের দাবি মেনে নয়া প্রোমোশন নীতি আনছে রাজ্য সরকার। অর্থাৎ, পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে অ্যাসিস্ট্যান্ট টিচার থেকে উচ্চতর পদে যাওয়ার সুযোগ মিলবে।
■ চার বছরের ইন্টিগ্রেটেড বিএড কোর্স।
জাতীয় শিক্ষানীতির সুপারিশ অনুযায়ী উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে স্নাতক পাঠ্যক্রম ইতিমধ্যে চার বছরের করেছে রাজ্য। তবে চার বছরের ইন্টিগ্রেটেড বিএড কোর্স চালু হচ্ছে না পশ্চিমবঙ্গে। সেটি আগের মতোই দু’বছরের থাকছে। স্কুলশিক্ষা হোক বা উচ্চশিক্ষা—সব ক্ষেত্রেই কর্মসংস্থানের উপর সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।